কোন সমস্যার জন্য রয়েছে কোন ডাক্তার? | পর্ব ২  Banner Photo

Ω author: Sadia Tasmia

 5308  3  0

প্রথমবারের মত কোনো রোগের উপসর্গ দেখা গেলে সবার প্রথমেই আমরা যেই ব্যাপারটা নিয়ে সবচেয়ে বেশী চিন্তায় পড়ি তা হচ্ছে, কোন ডাক্তারের কাছে যাব! পেটে ব্যথা হচ্ছে, এখন তা যেমন পাকস্তলীর কোনো অসুখে হতে পারে, তেমনি হতে পারে কোনো মেয়েলী অসুখে। মাথাব্যাথায় আগে চোখের ডাক্তার দেখাব না নিউরোলজির ডাক্তার, এই নিয়েও পড়তে হয় বিপাকে। এখন যদি এক অসুখের কারণে অন্য কোনো অসুখের ডাক্তারের কাছে চলে যাই তাহলে প্রয়োজনে অবশ্যই ডাক্তার আরেকজন ডাক্তারের রেফারেন্স দিয়ে দিবে কিন্তু তার কারণে অনেক সময়ও যেমন নষ্ট হবে আবার হতে পারে ভোগান্তিও। একারণেই কোন ধরণের উপসর্গ দেখলে কোন ডাক্তারের কাছে যাব তা প্রাথমিকভাবে জেনে রাখা সবার জন্যই খুব জরুরী। প্রথম পর্বের পর তাই আবারো চলে এলাম কখন কোন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে তার দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। 

নেফ্রোলজিস্টঃ নেফ্রোলজিস্ট কিডনি রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ।

নেফ্রোলজিস্ট কী কী ধরণের চিকিৎসা করে থাকেনঃ

১। কিডনির সূক্ষ ইঞ্জুরি যা পানিশূন্যতা এবং কিডনিতে রক্তসঞ্চালনে বাঁধার সূত্রপয়াত ঘটায়। 

২। অনেকদিন ধরে কিডনির অচলাবস্থা।

৩। কিডনি পাথর।

৪। পাইলোনিফ্রাইটিস, যা মূত্রথলীতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রামণের কারণে হয় এবং অবহেলায় ধীরে ধীরে কিডনি ইনফেকশনের পরিণত হয়।

এছাড়াও যে সকল অসুখ কিডনির ক্ষতি করেঃ

১। ডায়াবেটিস।

২। উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ।

৩। অতিরিক্ত ওজন।

৪। জন্মসূত্রে।

রক্তশূন্যতা, অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন, মূত্রথলীর সমস্যা, ইনসোমনিয়া, অকারণে ক্লান্তি  ইত্যাদি কিডনির কোনো অসুখের কারণে হতে পারে তাই এধরণের কোনো সমস্যা মাত্রাতিরিক্ত মনে হলে নেফ্রোলজিস্টের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে।

ডার্মাটোলজিস্টঃ ত্বক, চুল এবং নখের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। 

যে সকল কারণে ডার্মাটোলজিস্টের কাছে যাওয়া আবশ্যকঃ

১। ব্রণঃ ব্রণ সাধারণত একটা বয়সের পরে চলে যেতে শুরু করে কিন্তু তার ব্যাতিক্রম হলে কিংবা অস্বাভাবিক পরিমাণে ব্রণ উঠলে ডার্মাটলজিস্টের কাছে যেতে হবে।

২। স্কিন ক্যান্সারঃ স্কিন ক্যান্সার আছে কিনা তা একজন ডার্মাটোলজিস্টের কাছে স্ক্রিনিং না করিয়ে বোঝা সম্ভব না তাই আপনার ত্বকে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখলে এবং আপনার মাঝে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকলে দ্রুতই ডাক্তার দেখিয়ে নিন।

৩। এক্সিমাঃ অনেকদিন ধরে ত্বকে জ্বালাপোড়া এবং চুলকানি হলে তা এক্সিমার লক্ষণ। 

৪। স্কিন ড্যামেজঃ বয়স বা যেকোনো কারণে আপনার ত্বক ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকলে তার চিকিৎসাও এই ডাক্তার করবেন। 

৫। দাগঃ ত্বকে কোনোরকম দাগ থাকলে তার চিকিৎসাও এখানে হবে। 

অনকোলজিস্টঃ অনকোনজিস্ট হচ্ছে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ। প্রত্যেক অঙ্গের ক্যান্সারের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা অনকোলজিস্ট।

ইউরোলজিস্টঃ মূত্রনালীর ও পুরুষ প্রজনন ব্যবস্থার বিশেষজ্ঞ। পুরুষাঙ্গ বিষয়ক যেকোনো সমস্যা যেমন; মূত্রপাতে সমস্যা, রক্তপাত, ব্যথা, বন্ধাত্ব ইত্যাদি যেকোনো ধরণের সমস্যায় ইউরোলজিস্টের কাছে যেতে হবে। 

কার্ডিওলজিস্টঃ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। 

যে সকল কারণে কার্ডিওলজিস্টের কাছে গিয়ে চেক আপ করানো আবশ্যকঃ

২। তীব্র বুকে ব্যথা।

৩। পরিবারে আগে কারো হৃদরোগ হয়ে থাকলে। 

৪। কলেস্ট্রোরেলের মাত্রা ২০০এমজি/ডিএল বা এর বেশি হলে।

৫। উচ্চ রক্তচাপ।

৬। ধূমপায়ী হয়ে থাকলে।

৭। ডায়াবেটিক হলে।

৮। প্রিএক্লেম্পশিয়া হলে।

৯। ৪০ বছর বয়স পার করার পরে নতুন করে কোনো ব্যায়াম শুরু করার আগে। 

১০। মাড়িতে অতিরিক্ত ব্যথা হলে কারণ তা অনেক সময় হৃদরোগের কারণে হয়ে থাকে। 

হৃদরোগের উপসর্গঃ

১। বুকে তীব্র চাপ, ব্যথা, বা বুকে অস্বস্তি।

২। বুকের ব্যথা বা অস্বস্তি যা কাঁধ, ঘাড়, অস্ত্র, বা চোয়াল মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিশ্রামের পরেও তা কমে না। 

৩। ঘাম, ঠান্ডা, চামড়া ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া। 

৪। নিঃশ্বাসের দুর্বলতা

৫। বমি ভাব বা বমি হওয়া। 

৬। মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। 

৭। অস্পষ্ট দুর্বলতা বা ক্লান্তি। 

৮। দ্রুত বা অনিয়মিত পালস।

৯।চোয়াল, ঘাড়, পিঠের উপরের দিক বা বুকে ব্যথা

১০। কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হওয়া। 

১১। গিলতে অসুবিধা

১২। বুক ধড়ফড় করা। 

১৩। উদ্বেগ। 

১৪। নিম্ন রক্তচাপ।

উপরের যেকোনো উপসর্গ আপনার মাঝে থাকলে দ্রুতই কার্ডিওলজিস্টের কাছে যান। আপনার হৃদয় আপনার শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পেশী, এর যত্ন নিন।

অর্থোপেডিক সার্জনঃ হাড়, জয়েন্ট, লিগামেন্ট, টেন্ডনের রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ। কিছু অর্থোপেডিক সবরকমের অঙ্গের চিকিৎসা করে এবং বাকিরা শরীরের নির্দিষ্ট কিছু অঙ্গের বিশেষজ্ঞ যেমন, কোমর, হাঁটু, পা এবং গোড়ালি। 

যেকোনো দূর্ঘটনাবশত কারণে বা অকারণেই এসকল জায়গায় দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা অনুভূত হলে এই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। 

অস্টিওপ্যাথিকঃ চক্ষু বিশেষজ্ঞ। চোখ এবং দৃষ্টিশক্তির চিকিৎসা করেন। 

যে সকল কারণে অস্টিওপ্যাথিকের কাছে গিয়ে চেক আপ করানো আবশ্যকঃ

১। দৃষ্টিশক্তি হ্রাস। 

২। দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন।

৩। চোখের আকার, বর্ণ এবং ধরনে পরিবর্তন।

৪। কোনো বস্তুর বর্ণ বুঝতে না পারা।

৫। দৃষ্টিশক্তি সংকুচিত হওয়া। 

এছাড়াও নির্দিষ্ট সময় পর পর চোখের পরীক্ষা করাতে হবে;

  • ১৯ বছর বয়স থেকে ৪০ বছর বয়স: অন্তত প্রতি ১০ বছর পর পর।
  • ৪১ বছর বয়স থেকে ৫৫ বছর বয়স: অন্তত প্রতি ৫ বছর পর পর।
  • ৫৬ বছর বয়স থেকে ৬৫ বছর বয়স: অন্তত প্রতি ৩ বছর পর পর।
  • ৬৫ বছর বয়সে অন্তত প্রতি ২ বছর পর পর। 

 

আশা করি এই ব্লগের মাধ্যমে কোন ডাক্তারের কাছে কেনো যেতে হবে, সে ব্যাপারে কিছুটা হলেও আপনারা জানতে পেরেছেন। শেয়ার করে সকলের মাঝে এই সচেতনতা তৈরি করতে আমাদের সাহায্য করুন।

Share On Facebook

please login to review this blog and to leave a comment.


Hia Member Profile Photo

Mahadi Hasan

অনেক উপক্রিত হইলাম


More From Hia

কোন শারীরিক সমস্যায় কোন ডাক্তার? || পর্ব #০১

published on: 01 Jun, 2021

প্রথমবারের মত ...

 26303    3    0 
ডেঙ্গুঃ কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার এবং প্রতিরোধ!

published on: 21 Jul, 2019

এই বর্ষায় বৃষ্টির সাথেখিচুড়ি তাে উপভােগ করবেনই, তবে আপনারা যাতে সুস্থতার সাথেতা করতে পারেন তাইগুরুত্বপূর্ণ এক...

 8463    2    0 
এবারের ডেঙ্গু কেনো অন্যবারের চেয়ে আলাদা?

published on: 22 Jul, 2019

এবারের ডেঙ্গু কেনো আলাদা?: এবারের ডেঙ্গু জ্বরের সাথে আগের মিল নেই। নতুন কোন শক্তিশালী ডেঙ্গু ভাইরাস দিয়ে ছড়ানো এই অসুখ এবার ঢাকায় রীতিমতো মহামারি ...

 8405    2    0 

More From Health & Lifestyle

কোন শারীরিক সমস্যায় কোন ডাক্তার? || পর্ব #০১

author: Sadia Tasmia

প্রথমবারের মত ...

 26303    3    0 
আপনি কী শুচিবায়ু রোগে আক্রান্ত?

author: Hasnat Zahan Shapla

অনেক সময়ই আপনি বাসা থেকে বের হওয়ার পর আবারও গিয়ে চেক  করে আসেন যে আসলেই ব...

 5710    1    0 
জরুরি জন্মনিরোধক পিল খাওয়ার আগে অবশ্যই যা জানতে হবে!

author: Hasnat Zahan Shapla

ইমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিল বা ইসিপি বা জরুরি জন্মনিরোধক পিল অরক্ষিত শারীরিক সম্পর্কের পর বর্তমানে গর্ভধারণে ইচ্ছুক নয় এমন অনেক নারীদেরই একমাত্র ভরসা। তবে বেশিরভাগ নারীই জানেন না এর উপকারিতা কিংব...

 3875    1    0